গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস || First Trimester || গর্ভবতী মায়ের যা যা জানা দরকার

গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস || First Trimester

প্রতিটি নারীর স্বপ্ন থাকে মা হওয়ার। প্রেগন্যান্সি একজন নারীর জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এসময় প্রয়োজন বাড়তি যত্ন এবং সাবধানতা। First trimester হলো গর্ভাবস্থার প্রথম অবস্থা৷ গর্ভধারণের ১ম সপ্তাহ থেকে শুরু করে ১২ তম সপ্তাহ অর্থাৎ প্রথম ৩ মাসকে ধরা হয় ফার্স্ট ট্রাইমিস্টার৷ এই সময়ের প্রতিটি দিনই গুরুত্বপূর্ণ।

First Trimester
ছবি: ইন্টারনেট হতে সংগৃহীত


পিরিয়ড মিস হওয়ার পর প্রেগন্যান্সি টেস্ট পজিটিভ আসার পরপরই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে৷ অনেকেই মনে করে আমার তো আপাতত কোন শারীরিক সমস্যা নেই, চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে কেন! যেতে হবে কারণ, আপনার শেষ পিরিয়ডের তারিখটি গুরুত্বপূর্ণ। এই তারিখ হিসাব করে সম্ভাব্য ডেলিভারি তারিখ হিসেব করা হয়৷ পরবর্তীতে আলট্রাসনোগ্রাম করে সময় অনুযায়ী বাচ্চা সঠিকভাবে বাড়ছে কিনা তা মিলিয়ে নেয়া যায়। এ অবস্থায় প্রথম গাইনী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াকে বুকিং ভিজিট বলে। চিকিৎসক এ সময় গর্ভবতীর করনীয়, বর্জনীয়, জরুরী অবস্থাগুলো কি কি, কয়বার ডাক্তার ভিজিট করবেন এসবসহ আরো নানা বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলো এই সময়ে অবশ্যই মেনে চলবেন। মনে রাখবেন নরমাল ডেলিভারিতে সন্তান জন্মদানে গর্ভাবস্থার শুরু থেকে মুখ্য ভূমিকা আপনাকেই রাখতে হবে-

গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসে যদি ব্লিডিং বেশি দেখা যায়, ক্রাম্পিং হয় অথবা পেটে অনেক ব্যথা হয় তাহলে তাৎক্ষনিক চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে কারণ এগুলো মিসক্যারেজ অথবা এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির লক্ষণ৷

এ সময় প্রচুর সাদা স্রাব হওয়াও স্বাভাবিক তবে সাথে চুলকানি থাকলে অথবা বাদামী ডিসচার্জ হলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে৷

গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাস বমি বমি ভাব, খাবারে অরুচি, সবকিছুতেই গন্ধ লাগা, গা গুলানো, মাথা ঘুরানো, দূর্বলতা, কোষ্ঠ্যকাঠিন্য, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, তলপেটে ব্যথা, বুক জ্বালাপোড়া, পেটে গ্যাস, অস্বাভাবিক সাদা স্রাব, বমি, গন্ধ লাগা, অরুচি, পেটে গ্যাস ইত্যাদি সহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় খাবার তালিকায় প্রচুর পুষ্টিকর খাবার যেন থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তবে হাই প্রেশার, ডায়াবেটিস বা এ জাতীয় কোন রোগ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার খাবেন।

প্রস্রাবের চাপ, জ্বালাপোড়া, কোষ্ঠ্যকাঠিন্য এগুলি প্রেগন্যান্সিতে স্বাভাবিক। তাই প্রচুর শাকসবজি, তরল খাবার, পানি, গরম দুধ, পাকা কলা, ইসবগুলের ভুষি খেতে পারেন।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে।

এ সময় যতই অরুচি, বমিভাব থাকুক না কেনো, প্রতিবেলা নিয়মিত খাবার খেতে হবে৷ হালকা ধরণের সব কাজ করা, রান্না করা, গল্প, আড্ডা দেয়া, গল্পের বই পড়া, পরিবার পরিজনের সাথে সময় কাটানো উচিত৷ প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা উচিত৷

নিয়ম অনুযায়ী ঔষধ খেতে হবে, প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। গর্ভকালীন ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত কোন ঔষধ সেবন করবেন না।

ভারী কাপড় ধোয়া, ভারী জিনিস বহন, ঘর মোছা অর্থাৎ ভারী কোন কাজ করা যাবেনা। দীর্ঘ ভ্রমণ থেকে বিরত থাকুন।

এসময় যে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যায় নানাজনের পরামর্শ গ্রহণ ও গুগলে সার্চ করে নিজে নিজে চিকিৎসা করা থেকে বিরত থাকুন। নিজের আর বাচ্চার কথা ভেবে প্রয়োজনে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করবেন।

ডা. শাহিদা আক্তার রাখী
এমবিবিএস, বিসিএস (স্বাস্থ্য)
এফসিপিএস (অবস এন্ড গাইনী)
অবস এন্ড গাইনী বিশেষজ্ঞ ও সার্জন
ট্রেইন্ড ইন ইনফার্টিলিটি এন্ড ল্যাপারোস্কপিক সার্জারি

🔴 চেম্বার: গোমতী হাসপাতাল প্রাইভেট লিমিটেড
নজরুল এভিনিউ, ২য় কান্দিরপাড়, কুমিল্লা
হটলাইন: 01879-970055, 01711-798083

রোগী দেখার সময়: বিকাল ৪টা হতে রাত ৮টা (শুক্রবার চেম্বার বন্ধ)

সিরিয়াল দুই ভাবে নেয়া যায়:
🔴 সকাল ১০টায় 01958-422803 নাম্বারে কল করে। সিরিয়াল নেয়া শেষ হলে মোবাইল বন্ধ থাকে।

🔴 এবং ওয়েবসাইট হতে অগ্রিম সিরিয়াল নেয়া যায়।

 

আরও পড়ুন
⦿

গর্ভকালীন ৪ থেকে ৬ মাস || Second Trimester

⦿

গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাস || Third Trimester